নিউজ ডেস্ক
যশোরে চাঁদাবাজরা নতুন কৌশলে চাাঁদাবাজি করা শুরু করেছে। কৌশলী দুর্বৃত্তরা বাড়ি নির্মাণের রড, সিমেন্টসহ বিভিন্ন মালামাল সাপ্লাইয়ার বা ব্যবসায়ী সাজছে। এরপর তারা বাড়ি নির্মাণকারীদের মালামাল নিতে বাধ্য করছে।এছাড়া ‘মিষ্টি’ খাওয়ানোর নাম করে চাঁদা আদায় করছে।
বাড়ি নির্মাণকালে বাড়ির মালিকের কাছ থেকে এরকম চাঁদাবাজি বন্ধ করতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে যশোরের পুলিশ। এখন থেকে পুলিশের প্রত্যক্ষ তদারকিতেই বাড়ির মালিক বাড়ি নির্মাণ করার সুযোগ পাবেন। বাড়ি নির্মাতার কাছে কেউ যদি চাঁদা দাবি করলে পুলিশই চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
যশোরকে অন্যায়মুক্ত, সন্ত্রাসী কর্মকান্ডমুক্ত, সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পরিচালিত করতে যশোরের নতুন পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদারের আরো অন্যতম একটি উদ্যোগ এটি।
যশোর পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, যশোর শহরের ৯০টি নির্মাণাধীন বাড়িতে পুলিশের সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেয়া হয়েছে। সেখানে কোতোয়ালি থানার ওসি ও পুলিশ সুপারের মোবাইল নম্বর দেয়া আছে। ওই নির্মাণাধীন বিল্ডিং এ কাজে কোনও বাঁধা হচ্ছে কি-না তা তদারকি করছেন বিট পুলিশিং এর একজন অফিসার। এছাড়া কোতোয়ালি থানা, ফাঁড়ি পুলিশ বা ডিবি পুলিশকে তদারকি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোনও অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পর্যায়ক্রমে শহরের সকল নির্মাণাধীন বিল্ডিংয়ে এই ধরনের সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি ঝুলানো হবে বলেও জানা গেছে।
যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ‘ক’ সার্কেল গোলাম রাব্বানী চাঁদবাজদের নতুন কৌশল সম্পর্কে বলছিলেন। গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, প্রত্যেক এলাকায় দুর্বৃত্তরা কথিত ইট, বালি, রড, সিমেন্টসহ বিভিন্ন মালামাল সাপ্লাইয়ার বা ব্যবসায়ীর নাম ধারণ করে বাড়ি নির্মাণকারীদের মালামাল নিতে বাধ্য করে। তাদের কাছ থেকে মালামাল নেয়া না হলে দুর্বৃত্তরা বাড়ি তৈরিতে নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।
সূত্র জানিয়েছে, দুর্বৃত্তরা প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় থাকায় কেউ সচরাচর পুলিশে লিখিত অভিযোগ দিতে সাহস পান না। এ অবস্তা থেকে মুক্তি দিতে পুলিশ বাড়ির নির্মাণ কাজের তদরকি নিজেরা করবে বলে নাগরিকদের জানিয়ে দিচ্ছে। এই কাজে প্রত্যেক এলাকায় বিট পুলিশিং ব্যবস্থা কার্যকর রয়েছে। যশোর শহর ও শহরতলীতে বিট পুলিশিং আছে মোট ২৩টি। আর পুরো জেলায় আছে ১২৯টি।
প্রত্যেক বিটে দায়িত্বপ্রাপ্ত হিসেবে একজন করে সাব-ইন্সপেক্টর আছেন। তারা তাদের স্ব-স্ব মহল্লায় বাড়ি নির্মাণ কাজের তদারকি করবেন। এছাড়া কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের মাধ্যমে এই কাজের তদারকি চলছে।
শহরের খড়কী এলাকার জামিল (ছদ্ম নাম) জানিয়েছেন, তিনি ওই এলাকায় জমি কিনে বিল্ডিং করতে যান। কিন্তু বাড়ি নির্মাণের শুরুতে ওই এলাকার কয়েকজন তার কাছে আসে। এবং তাদের কাছ থেকে ইট, বালি নিতে বলে। তিনি রাজি হয়ে প্রথমে নেন। কিন্তু নিম্নমানের ইট-বালি দেয়ার আর মালামাল নিতে চাননি। কিন্তু তাদের কাছ থেকে নেয়া ছাড়া কোনও উপায়ও ছিলো না।’
তিনি আরও আরো বলেন, পুলিশের নতুন উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। কারণ তার নির্মাণাধীন বাড়িতে একটি বিজ্ঞপ্তি ঝুলিয়ে দিয়েছে পুলিশ। এরপর থেকে ওই দুর্বৃত্তরা আমার কাছে আসেনি। এই ধরনের উদ্যোগ আগে নিলে তার মতে ওই এলাকায় বাড়ি নির্মাণকারীরা উপকার পেতেন।